বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম: মাঝপথে ভেন্যু বদল, সাড়ে চার ঘণ্টার ম্যাচে জয় বাংলাদেশের
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ-ভুটান ম্যাচ ঘটনাবহুল এক কীর্তির সাক্ষী হয়ে রইল। বৃষ্টির কারণে মাঝপথে ভেন্যু বদলের অভূতপূর্ব ঘটনায় এই ম্যাচ বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কিংস অ্যারেনায় প্রথমার্ধের খেলা শেষ হওয়ার পর মাঠ খেলার অযোগ্য হয়ে পড়ায় প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টা বিলম্বে কিংস অ্যারেনার পাশের অনুশীলন মাঠে দ্বিতীয়ার্ধ অনুষ্ঠিত হয়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪-১ গোলে জয়লাভ করে।বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এমন ঘটনা এর আগে ঘটেনি, যেখানে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ এক ভেন্যুতে শুরু হয়ে অন্য ভেন্যুতে শেষ হয়েছে। বিশ্ব ফুটবলেও এমন ঘটনা বিরল। এই নাটকীয় ম্যাচটি ফুটবলপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন জায়গা করে থাকবে। ম্যাচের প্রথমার্ধে শান্তি মার্ডির গোলে বাংলাদেশ ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার এই ম্যাচের জন্য একাদশে পরিবর্তন এনেছিলেন। নিয়মিত অধিনায়ক আফিদা খন্দকার ও এই টুর্নামেন্টে চার গোল করা মোসাম্মৎ সাগরিকাকে বাইরে রাখা হয়। সুরমা জান্নাতকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বৃষ্টির কারণে কিংস অ্যারেনার মাঠ ভারী ও কর্দমাক্ত হয়ে পড়ায় দুই দলই স্বাভাবিক খেলা প্রদর্শন করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আগে রেফারি খেলা আধ ঘণ্টা বিলম্বিত করার সিদ্ধান্ত নেন। মাঠ পরিদর্শনের পরও খেলার উপযোগী মনে না হওয়ায় মাঠকর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা করেও কিংস অ্যারেনার মাঠ প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হন। বাইলজ অনুযায়ী, ম্যাচ দুই দফায় সর্বোচ্চ আধ ঘণ্টা স্থগিত করা যায়। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব চলে যায় টুর্নামেন্ট কমিটির হাতে। বাংলাদেশ ও ভুটানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়, ম্যাচটি সেদিনই শেষ করতে হবে। কিংস অ্যারেনার পাশে থাকা অনুশীলন মাঠ খেলার উপযোগী থাকায় সেখানে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফ, টিভি সম্প্রচারের ক্যামেরা এবং দর্শকরা সবাই এই অনুশীলন মাঠে স্থানান্তরিত হন। এই মাঠে দর্শক গ্যালারি না থাকায় দর্শকরা মাঠের চারপাশে বেড়ার পেছনে দাঁড়িয়ে খেলা উপভোগ করেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ভুটান গোল করে ১-১ সমতা ফেরায়। কিছুক্ষণ পর শান্তি মার্ডি পুনরায় বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন। এরপর টানা আরও দুটি গোল করে বাংলাদেশ ৪-১ গোলে জয় নিশ্চিত করে। তিন ম্যাচ শেষে ৯ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে চারটি দল একে অপরের সঙ্গে দুইবার করে মুখোমুখি হবে। ছয় ম্যাচ শেষে সর্বোচ্চ পয়েন্ট প্রাপ্ত দল চ্যাম্পিয়ন হবে।[] এই ঘটনাবহুল ম্যাচ বাংলাদেশের জয়ের পাশাপাশি ফুটবল ইতিহাসে একটি অভিনব অধ্যায় হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।