‘হারাধনের দশটি ছেলে, রইল বাকি এক’—রিকি পন্টিংয়ের একটি মন্তব্যের ভাবার্থ এভাবেই দাঁড় করানো যায়। টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ রানের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা পন্টিংকে ছাড়িয়ে এখন রুটের সামনে শুধু শচীন। প্রশ্ন উঠছে, শচীনের রেকর্ড ভাঙতে রুটের কত দিন লাগবে?
ম্যানচেস্টারে রুটের এই ইনিংস তাকে উতসর্গ করা এক দিনে পরিণত হয়। পন্টিংকে ছাড়ানোর মুহূর্তে ছয় হাজার দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেন। সাজঘরে ফেরার পথেও দর্শকদের সম্মান পান তিনি। তবে ইনিংস শেষে লেগসাইডে শ্যাডো ব্যাটিং করে নিজের ভুলের জন্য আক্ষেপ করতে দেখা যায় তাকে, যা তার ক্রিকেটের প্রতি ক্ষুধার পরিচয় দেয়।
রুট বরাবরই বলে এসেছেন, ব্যক্তিগত মাইলফলক তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়, দলীয় সাফল্যই তাকে বেশি টানে। গত বছর মুলতানে তিনি বলেছিলেন, “আমি কখনোই নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করি না, কারণ সেটা না পূরণ হলে মনে হয় ব্যর্থ হয়েছি।” তবে এই ইনিংসের পর শচীনের রেকর্ড নিয়ে কি তার মনে কিছুটা ভাবনা জাগবে না?
৩৪ বছর বয়সী রুট এখনও ফিট এবং ২০২৭ বিশ্বকাপ খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ২০১২ সালে নাগপুরে অভিষেকের পর থেকে ইংল্যান্ডের ১৫৯ টেস্টের মধ্যে ১৫৭টিতে খেলেছেন তিনি। চোটের কারণে কখনো ম্যাচ মিস করেননি। শেষ ৪০ টেস্টে তার গড় ৫৭.৭০, ১৩টি সেঞ্চুরি এবং শেষ ৫০ ইনিংসে ২,৫৫৬ রান তার ফর্মের প্রমাণ। এই গতিতে ২০২৭ সালের মধ্যে শচীনের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলা তার জন্য অসম্ভব নয়।
শচীনের আরেকটি রেকর্ডও রুটের সামনে—৫১ সেঞ্চুরির রেকর্ড। ম্যানচেস্টারের সেঞ্চুরি তার ক্যারিয়ারের ৩৮তম। তবে পন্টিং (৪১) ও জ্যাক ক্যালিসের (৪৫) সেঞ্চুরি ছাড়াতে হবে তাকে।
তবে রুটের একটি আক্ষেপ এখনও রয়ে গেছে। তার ৩৮ সেঞ্চুরির একটিও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আসেনি। আগামী অ্যাশেজে সেই আক্ষেপ ঘোচানোর সুযোগ পাবেন তিনি। শচীনের রেকর্ড ভাঙার আগে এই মাইলফলক অর্জনই হয়তো তার প্রথম লক্ষ্য হবে। ইংল্যান্ড ক্রিকেটের কিংবদন্তি হিসেবে রুট ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত, তবে অস্ট্রেলিয়ায় সেঞ্চুরি করতে পারলে তার গ্রেটনেসে নতুন মাত্রা যোগ হবে।