পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি দেশের টেস্ট ক্রিকেটের ক্রমশ পতন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি একটি স্থানীয় ক্রীড়া মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই পতনের কারণ হিসেবে তরুণ খেলোয়াড়দের তাড়াহুড়ো করে জাতীয় দলে নির্বাচনের প্রবণতাকে দায়ী করেছেন।
আফ্রিদি বলেন, “সবচেয়ে বড় ভুল হচ্ছে তরুণ খেলোয়াড়দের খুব তাড়াতাড়ি জাতীয় দলে নিয়ে আসা। পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) একটি বা দুটি ভালো ইনিংস খেললেই তাদের বেছে নেওয়া হচ্ছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “পাকিস্তানের হয়ে খেলা এত সহজ হওয়া উচিত নয়। খেলোয়াড়দের আগে ঘরোয়া ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজেদের প্রমাণ করতে হবে।”
তিনি আরও মনে করেন, প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধাপে ধাপে উপরে উঠতে হবে। এর মধ্যে পাকিস্তান ‘এ’ (শাহিনস) দলে খেলার ধাপও থাকা উচিত। আফ্রিদির ভাষায়, “জাতীয় দলে ওঠার পথ কঠিন হওয়া উচিত, যাতে খেলোয়াড়রা পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্বের মূল্য বুঝতে পারে।”
ঘরোয়া ক্রিকেটের মান উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “তিন ফরম্যাটেই উন্নতি করতে হলে ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে হবে। নিচের স্তরে ভালো কোচ ও মেন্টর নিয়োগ করতে হবে এবং শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে।”
আফ্রিদি উল্লেখ করেন, শীর্ষ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর তুলনায় পাকিস্তান কম টেস্ট ম্যাচ খেলে। দুই বা তিন ম্যাচের সংক্ষিপ্ত সিরিজের কারণে খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা ও ধারাবাহিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে (২০১৯–২০২১) পাকিস্তান ১২ ম্যাচ খেলে পঞ্চম স্থানে ছিল। ২০২১–২০২৩ আসরে ১৪ ম্যাচ খেলে তারা সপ্তম স্থানে নেমে যায়। সদ্য শেষ হওয়া ২০২৩–২০২৫ আসরে ১৪ টেস্টে মাত্র পাঁচটি জয় নিয়ে তালিকার তলানিতে ছিল পাকিস্তান। তুলনায়, ইংল্যান্ড, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দল একই সময়ে ১৮টির বেশি টেস্ট খেলেছে।
পাকিস্তানের পরবর্তী টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ অভিযান শুরু হবে অক্টোবরে, ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এই চক্রে তারা মোট ১৩টি টেস্ট খেলবে। সর্বশেষ তারা জানুয়ারি ২০২৫-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেছে।
আফ্রিদির এই মন্তব্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) নির্বাচন প্রক্রিয়া ও ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।