আজ (২৯ জুলাই ২০২৫) সিডনি টাউন হলে এএফসি আয়োজিত ড্র অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সব দেশের অধিনায়ক ও কোচদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ দল থেকে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এই ড্র-এ বাংলাদেশকে রাখা হয়েছে গ্রুপে, যেখানে তাদের মুখোমুখি হতে হবে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের।
বাংলাদেশের গ্রুপ পর্বের সূচি
নারী এশিয়ান কাপের ২১তম আসরে বাংলাদেশ তিনটি ম্যাচ খেলবে গ্রুপ পর্বে:
৩ মার্চ ২০২৬: বাংলাদেশ বনাম চীন, যারা ১৯৮৬ সাল থেকে ১৪ বার টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে ৯ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
৬ মার্চ ২০২৬: বাংলাদেশ বনাম উত্তর কোরিয়া, ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৯ নম্বরে থাকা দল, যারা ১৯৮৯ সাল থেকে ১০ বার এশিয়ান কাপ খেলে ২০০১, ২০০৩ ও ২০০৮ সালে শিরোপা জিতেছে।
৯ মার্চ ২০২৬: বাংলাদেশ বনাম উজবেকিস্তান, যারা পাঁচবার এই টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও গ্রুপ পর্বের বাইরে যেতে পারেনি।
টুর্নামেন্টের গুরুত্ব
২০২৬ সালের ১ থেকে ২১ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, পার্থ এবং গোল্ড কোস্টের পাঁচটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে এই টুর্নামেন্ট। ১২ দলের এই লড়াই শুধু এশিয়ান কাপের শিরোপার জন্যই নয়, এটি ২০২৭ ফিফা নারী বিশ্বকাপ এবং ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের বাছাইয়ের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা আট দল ২০২৮ অলিম্পিকের বাছাইয়ের পরবর্তী পর্বে খেলার সুযোগ পাবে, আর শীর্ষ ছয় দল সরাসরি ব্রাজিল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেবে।
টুর্নামেন্টে তিনটি গ্রুপে চারটি করে দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুটি দল সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে, এবং তৃতীয় স্থানে থাকা তিন দলের মধ্যে সেরা দুটি দলও শেষ আটে খেলার সুযোগ পাবে।
বাংলাদেশের ঐতিহাসিক যাত্রা
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এবারের বাছাই পর্বে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। ২০১৪ এবং ২০২২ সালের বাছাইয়ে পাঁচ ম্যাচের একটিতেও জয় পায়নি তারা। কিন্তু ২০২৫ সালের ২৯ জুন থেকে ৫ জুলাই মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত বাছাইয়ে তিনটি ম্যাচেই দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে পিটার বাটলারের দল।
প্রথম ম্যাচ: র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ এগিয়ে থাকা বাহরাইনকে ৭-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ম্যাচ: র্যাঙ্কিংয়ে ৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ গোলে পরাজিত করে। এই জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের চূড়ান্ত পর্বে খেলা নিশ্চিত হয়।
তৃতীয় ম্যাচ: র্যাঙ্কিংয়ে ১৩ ধাপ পেছানো তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ সি-এর শীর্ষে থেকে বাছাই শেষ করে।
রিতু পর্ণা চাকমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল এই বাছাইয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। তার দুটি গোল মিয়ানমারের বিপক্ষে জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা
চীন, উত্তর কোরিয়া এবং উজবেকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে গ্রুপ পর্ব পার হওয়া কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। বাছাইয়ে তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং আত্মবিশ্বাস প্রমাণ করে, তারা যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। এই টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা বিশ্ব মঞ্চে তাদের সম্ভাবনা তুলে ধরবে।
বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দল ১৯৮০ সালে কুয়েতে এশিয়ান কাপ খেলেছিল। এবার নারী দলের ঐতিহাসিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের ফুটবল ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যুক্ত হতে যাচ্ছে।