ফুটবলের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসতে চলেছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ম নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইএফএবি (IFAB) পেনাল্টি নিয়মে এমন একটি পরিবর্তনের প্রস্তাব বিবেচনা করছে, যা ২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে কার্যকর হতে পারে। এই নিয়ম চালু হলে পেনাল্টি মিস বা গোলরক্ষকের ঠেকানোর পর ফিরতি শটে গোল করার সুযোগ আর থাকবে না।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য সান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএফএবি’র প্রস্তাব অনুযায়ী, পেনাল্টি মিস হলে বা গোলরক্ষক তা ঠেকালে খেলা সরাসরি গোলকিক দিয়ে পুনরায় শুরু হবে। এর ফলে ফুটবলের ১৩৪ বছরের পুরনো রিবাউন্ড থেকে গোল করার রীতি বাতিল হবে। বর্তমানে পেনাল্টি শট নেওয়ার পর বল মাঠে থাকলে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে।
আইএফএবি’র যুক্তি, পেনাল্টি নিজেই আক্রমণকারী দলের জন্য ফাউলের তুলনায় বাড়তি সুবিধা দেয়। রিবাউন্ড থেকে গোলের আরও সুযোগ দেওয়া প্রতিপক্ষ দলের প্রতি অন্যায়। এ ছাড়া, এই নিয়ম চালু হলে পেনাল্টি বক্সে আগেভাগে ঢুকে পড়া বা ‘ইনক্রোচমেন্ট’ সংক্রান্ত বিতর্কও কমবে।
ফিফার রেফারি কমিটির প্রধান ও কিংবদন্তি ইতালিয়ান রেফারি পিয়ারলুইজি কলিনা এই বছরের শুরুতে পেনাল্টি রিবাউন্ড বাতিলের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “স্ট্রাইকারের সুযোগ আর গোলরক্ষকের সুযোগের মধ্যে বিশাল ফারাক। প্রায় ৭৫% পেনাল্টি সফল হয়। তারপরও রিবাউন্ড থেকে আরেকটি সুযোগ দেওয়া বাড়াবাড়ি।”
এই প্রস্তাব নিয়ে আইএফএবি’র চূড়ান্ত আলোচনা হবে ২০২৬ সালের মার্চ মাসে। সেখানে ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে নতুন নিয়ম কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এর আগে সম্প্রতি পেনাল্টি নিয়ে আরেকটি নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে। জুলিয়ান আলভারেজের চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে বিতর্কিত ডাবল টাচ পেনাল্টির ঘটনার পর নিয়ম সংশোধন করা হয়। এখন পেনাল্টি নেওয়ার সময় ভুলবশত দুই পায়ে বল মারা হলে বা সাপোর্টিং পায়ে লেগে গেলে, গোল হলে পেনাল্টি পুনরায় নেওয়া হবে, আর মিস হলে প্রতিপক্ষ দল ইন্ডাইরেক্ট ফ্রি কিক পাবে।
নতুন প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে ফুটবলের পেনাল্টি শটের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে। আক্রমণকারী দলের বাড়তি সুযোগের দিন শেষ হতে পারে। ফুটবলপ্রেমীরা এখন অপেক্ষায় আছেন, আইএফএবি এই সাহসী সিদ্ধান্তে কীভাবে সিলমোহর দেয়।