রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫

বিপিএল স্পট ফিক্সিং তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য: একটি ম্যাচ হারার জন্য ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব

 বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) স্পট ফিক্সিংয়ের তদন্তে উঠে এসেছে অবিশ্বাস্য তথ্য। একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে একটি নির্দিষ্ট ম্যাচ হারার জন্য বেটিং চক্রের পক্ষ থেকে ৪০০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত কমিটি এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি যে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল কি না। তবে, আশ্চর্যজনকভাবে, তারা এই প্রস্তাবের কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দুর্নীতি দমন ইউনিটকে (এসিইউ) জানায়নি এবং শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচে হেরে বসে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে, বিপিএল ২০২৪-২৫ আসরে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট প্রায় প্রস্তুত। সাবেক বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের এই কমিটি ৩০০ ঘণ্টার অডিও কথোপকথন এবং তিন হাজার পৃষ্ঠার লিখিত নথি পর্যালোচনা করেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এই রিপোর্ট বিসিবি সভাপতির কাছে জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

তদন্তে প্রাথমিকভাবে ৩৬টি সন্দেহজনক ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে ১০-১২ জন ক্রিকেটারের নাম উঠে এসেছে, যাদের মধ্যে ৩-৪ জনকে ‘হাই ফ্ল্যাগড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জাতীয় দলের একজন পেসার এবং একজন অফ স্পিনারও রয়েছেন। এছাড়া, সর্বশেষ শ্রীলঙ্কা সফরে থাকা একজন খেলোয়াড় এবং একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচের নামও তদন্তে এসেছে। তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজি—দুর্বার রাজশাহী, সিলেট স্ট্রাইকার্স এবং ঢাকা ক্যাপিটালস—সরাসরি অভিযুক্ত হয়েছে।

তদন্তে আরও প্রকাশ পেয়েছে যে, শুধু সর্বশেষ আসর নয়, গত পাঁচটি বিপিএল মিলিয়ে ১৪০টিরও বেশি সন্দেহজনক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় ও বিদেশি মিলিয়ে ৬০ জনের বেশি খেলোয়াড় জড়িত। স্পট ফিক্সিংয়ের সঙ্গে সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্পৃক্ততার ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, টেলিভিশন সম্প্রচারে অনলাইন বেটিংয়ের বিজ্ঞাপন চালিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান ১৭০-১৮০ কোটি টাকা আয় করেছে। এমনকি সন্দেহভাজন এজেন্টরা দায়িত্বশীলদের আশ্রয়ে করপোরেট বক্সে বসে খেলা দেখেছেন।

রিপোর্টে বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে ঢেলে সাজানোর জোরালো সুপারিশ থাকবে। পাশাপাশি, অনলাইন বেটিং বন্ধে বিদ্যমান আইন সংস্কার বা নতুন আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেওয়া হবে, যাতে বিসিবি স্বাধীনভাবে ব্যবস্থা নিতে পারে।

এই তদন্তের ফলাফল বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে পারে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া গেলে ক্রিকেটের সুনাম ও ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.