বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নেপালে উৎকণ্ঠার তিন দিন, বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল

নেপালে তিনটি রুদ্ধশ্বাস দিন কাটিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল এবং তাদের সঙ্গে থাকা প্রায় বিশ জন সাংবাদিক। দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দল ও সাংবাদিকরা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটিয়েছেন। তবে অবশেষে এই অনিশ্চয়তার অবসান হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পাঠানো বিশেষ ফ্লাইটে করে তারা কাঠমান্ডু থেকে ঢাকায় ফিরছেন।

সফর শুরুর আগে কেউই কল্পনা করেননি যে এই যাত্রা এমন নাটকীয় হবে। বাংলাদেশ ফুটবল দল নেপালে গিয়েছিল দুটি ফিফা টিয়ার-১ ইন্টারন্যাশনাল ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে। প্রথম ম্যাচটি গত ৬ সেপ্টেম্বর গোলশূন্য ড্র হয়, এবং দল দ্বিতীয় ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু এরপরই পরিস্থিতি বদলে যায়। নেপালে ‘জেন-জি’ বিক্ষোভ চূড়ান্ত রূপ নেয়, যার ফলে দ্বিতীয় ম্যাচটি, যা গত মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, বাতিল হয়।

পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগে বাধ্য হন, এবং ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবারই দলের ঢাকায় ফেরার কথা ছিল, কিন্তু বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় জামাল ভূঁইয়াদের দেশে ফেরা আটকে যায়। এরপর দুটি দিন কেটেছে উৎকণ্ঠা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে।

অবশেষে গতকাল বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হয়। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে দল ও সাংবাদিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (আনফা) একটি বাস পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রহরায় বাংলাদেশ দলকে নিয়ে স্থানীয় সময় পৌনে নয়টায় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।

ঢাকা থেকে পাঠানো এই বিশেষ ফ্লাইটটি কাঠমান্ডুতে পৌঁছেই ইঞ্জিন বন্ধ না করে সবাইকে নিয়ে অবিলম্বে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে। দল ও সাংবাদিকদের আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যেন তারা সকাল ৯টার মধ্যে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে বিমানবন্দরে প্রস্তুত থাকেন। বাংলাদেশ দল এই নির্দেশনা মেনে এখন বিমানের অপেক্ষায় রয়েছে।

নেপালে বাংলাদেশের হাইকমিশনার শফিকুর রহমান দল ও সাংবাদিকদের বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছেন। তিনি দলের সদস্য ও সাংবাদিকদের সঙ্গে ভিআইপি লাউঞ্জে অবস্থান করছেন এবং তাদের বিমানে তুলে দেওয়ার পর অফিসে ফিরবেন।

এই বিশেষ ফ্লাইটে মোট ৫৪ জন যাত্রী থাকবেন, যার মধ্যে ৩৮ জন ফুটবল দলের সদস্য এবং প্রায় এক ডজন সাংবাদিকসহ অন্যান্য বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই ফিরতি যাত্রা সম্ভব হয়েছে।


Share This Post

শেয়ার করুন

Author:

Note For Readers: The CEO handles all legal and staff issues. Claiming human help before the first hearing isn't part of our rules. Our system uses humans and AI, including freelance journalists, editors, and reporters. The CEO can confirm if your issue involves a person or AI.