ম্যান সিটিকে হারিয়ে এফএ কাপ জয়ের পর মালিকানা জটিলতায় ইউরোপা লিগ থেকে বাদ ক্রিস্টাল প্যালেস
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এফএ কাপ জিতে ইউরোপা লিগে খেলার স্বপ্ন দেখছিল ক্রিস্টাল প্যালেস। কিন্তু ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার এক রুলিং তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে। মাল্টি-ক্লাব মালিকানা নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে ক্রিস্টাল প্যালেসকে ইউরোপা লিগ থেকে নামিয়ে কনফারেন্স লিগে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন মার্কিন ব্যবসায়ী জন টেক্সটর, যিনি ক্রিস্টাল প্যালেসের ৪৩ শতাংশ শেয়ারের মালিক এবং একই সঙ্গে ফরাসি ক্লাব অলিম্পিক লিওঁর মালিকানায়ও জড়িত। উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী, একই মালিকের নিয়ন্ত্রণে থাকা দুটি ক্লাব একই ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে না, যদি তাদের মধ্যে ‘প্রভাবশালী মালিকানা’ প্রমাণিত হয়। টেক্সটর দাবি করেছেন, তিনি প্যালেসের ‘নিয়ন্ত্রণকারী মালিক’ নন এবং সম্প্রতি তার শেয়ার নিউ ইয়র্ক জেটসের মালিক উডি জনসনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে উয়েফা এই যুক্তি গ্রহণ করেনি। কারণ, শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া ১ মার্চের নির্ধারিত সময়সীমার পরে সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে, লিওঁ তাদের আর্থিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়ে লিগ ওয়ানে ষষ্ঠ স্থানে থেকে ইউরোপা লিগে জায়গা করে নিয়েছে, যার ফলে প্যালেসকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। ক্রিস্টাল প্যালেসের জন্য এটি ছিল ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় তাদের অভিষেক মৌসুম। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে এফএ কাপ ফাইনালে এবেরেচি এজের গোলে ঐতিহাসিক জয়ের পর তারা ইউরোপা লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। কিন্তু ইউরোপা লিগ থেকে বাদ পড়ে কনফারেন্স লিগে নামতে হওয়ায় ক্লাব ও সমর্থকদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়েছে। স্কাই স্পোর্টসের খবরে বলা হয়েছে, প্যালেস এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টস (সিএএস)-এ আপিল করার পরিকল্পনা করছে। তবে আপিলের ফলাফল না আসা পর্যন্ত ইউরোপা লিগে ফেরার সম্ভাবনা অনিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে নটিংহ্যাম ফরেস্ট, যারা প্রিমিয়ার লিগে সপ্তম স্থানে থেকে কনফারেন্স লিগে জায়গা পেয়েছিল, তারা প্যালেসের জায়গায় ইউরোপা লিগে উঠতে পারে। তবে উয়েফা এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণ দেয়নি। এই অনিশ্চয়তা প্যালেসের গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার পরিকল্পনাকেও বাধাগ্রস্ত করেছে। ইউরোপা লিগে খেলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যেসব তারকা ফুটবলারদের দলে টানার চেষ্টা চলছিল, তাদের নিয়েও এখন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফুটবল মাঠের ম্যাচের মতোই উত্তেজনাপূর্ণ হয়, তেমনি মাঠের বাইরের সিদ্ধান্তও কখনো কখনো ক্লাবের ভাগ্য বদলে দেয়। ক্রিস্টাল প্যালেসের জন্য ইউরোপিয়ান ফুটবলের স্বপ্ন শুরু হওয়ার আগেই মালিকানা জটিলতার কারণে ধাক্কা খেয়েছে, যা ক্লাবটির জন্য এক নাটকীয় মোড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।