ম্যাচের শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ১৪ রান, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বোলার ওয়েন পারনেল দারুণ বোলিং করছিলেন। রব কুইনি প্রথম বলেই ছক্কা মেরেছিলেন, তবে দ্বিতীয় বলে কুইনি বলটি এক্সট্রা কভার দিকে মারতেই বাঁ দিক থেকে একঝাঁক খেলা শেষে দৌড়ে এসে অবিশ্বাস্য ডাইভে বল থামান এবি ডি ভিলিয়ার্স। তিনটি নিশ্চিত রানের সুযোগ তিনি ভণ্ডুল করেন।
শেষ বল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৩ রান। ব্যাট হাতে ছিলেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান, যিনি তখন ৪৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন। পারনেল ফুলার লেন্থ বোলিং করতেই ক্রিশ্চিয়ান সোজা শট খেলেন এবং রান নেওয়ার চেষ্টা করেন। সাধারণত এই শটে দুই রান নিশ্চিত হওয়া যায়, যা হলে ম্যাচটি টাই হয়ে যেত। কিন্তু ডি ভিলিয়ার্স দ্রুত ছুটে এসে বল নিয়ে এক মুহূর্তও দেরি না করে উইকেটের দিকে থ্রো করেন। নন-স্ট্রাইকার অনেক দূরে থাকায় ক্রিশ্চিয়ান রান আউট হয়ে যান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা নাটকীয় জয় পায়।
এ দিনের ফিল্ডিং দান এখানেই শেষ নয়। পঞ্চম ওভারে ক্রিস লিনের এক ঝড়ো শট লং অনে ছিল, যেখানে ডি ভিলিয়ার্স দৌড়ে গিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে দলকে বড় সুবিধা এনে দেন। তবে ব্যাট হাতে এবি ডি ভিলিয়ার্সের পারফরম্যান্স ছিল না তেমন চমকপ্রদ, মাত্র ৪ বলে ৬ রান করেন তিনি।
আগে থেকে এবি ডি ভিলিয়ার্স যেন একাই দক্ষিণ আফ্রিকাকে সেমিফাইনালে তুলে এনেছেন। টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৩১১ রান, যার মধ্যে দুইটি সেঞ্চুরি এবং একটি ফিফটি রয়েছে। যদিও সেমিফাইনালে তার ব্যাটিং তেমন জমেনি, তবে ফিল্ডিংয়ে তার অসাধারণ অবদানেই প্রোটিয়া দল জয় পেয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে মরনে ফন উইক ৩৫ বলে ৭৬ এবং ওপেনার জন স্মাটস ৫৭ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন ড্যান ক্রিশ্চিয়ান। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়েন পারনেল ও হারডাল ভিলহোয়েন দুজনই দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনও শিরোপা জিততে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা, তবে এবার ডব্লিউসিএল শিরোপা জয়ের খুব কাছাকাছি তারা। ২ আগস্ট ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে পাকিস্তানের, যারা সেমিফাইনালে ভারতের 'ওয়াকওভার'-এর কারণে সরাসরি ফাইনালে উঠেছে।
ডি ভিলিয়ার্সের অসাধারণ ফিল্ডিং এবং দলের সংগ্রামের মাধ্যমে এই ম্যাচটি দীর্ঘদিন মনে থাকবে ক্রিকেট ভক্তদের। এবার তার লক্ষ্য ফাইনালে সেরা পারফর্ম করে শিরোপা ঘরে তোলা।