ভারতীয় ক্রিকেট দলের তারকা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি দীর্ঘদিন ধরে পরিবারসহ লন্ডনে অবস্থান করছেন। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে তাকে ফিটনেস টেস্টে অংশ নিতে হয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করে লন্ডনেই এই টেস্টের আয়োজন করেছে। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক, কারণ অন্য সব ক্রিকেটারকে বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে (এনসিএ) টেস্ট দিতে হয়েছে।
দৈনিক জাগরণের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে থাকা কোহলি বিসিসিআইয়ের কাছে বিশেষ ছাড়ের আবেদন করেছিলেন। বোর্ডের অনুমতি পাওয়ায় তার ফিটনেস টেস্ট লন্ডনে বিসিসিআইয়ের ফিজিওথেরাপিস্ট ও স্ট্রেংথ কোচের তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়। কোহলি এই টেস্টে উত্তীর্ণ হলেও তাকে এই বিশেষ সুবিধা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অন্যদিকে, ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রিত বুমরাহ, সুর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, কুলদীপ যাদবসহ অন্যান্য খেলোয়াড়রা বেঙ্গালুরুর এনসিএ-তে ফিটনেস টেস্ট দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোহলিই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি দেশের বাইরে ফিটনেস টেস্ট দিয়েছেন। অন্য কোনো খেলোয়াড়কে এমন সুবিধা দেওয়া হয়নি।
বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানিয়েছেন, “কোহলি নিশ্চয়ই পূর্বানুমতি নিয়েই এই টেস্ট দিয়েছেন।” তবে ভবিষ্যতে অন্য কোনো খেলোয়াড় একই ধরনের ছাড় চাইলে তা দেওয়া হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ফিটনেস টেস্টে খেলোয়াড়দের ইয়ো-ইয়ো স্কোর এবং মৌলিক শক্তি ও রিকভারি প্যাটার্ন যাচাই করা হয়েছে। এই টেস্টে রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, মোহাম্মদ সিরাজ, সুর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, কুলদীপ যাদবসহ প্রায় সবাই অংশ নিয়েছেন। তবে ঋষভ পান্ত, রবীন্দ্র জাদেজা, কে এল রাহুল ও নীতীশ রেড্ডির মতো খেলোয়াড়দের টেস্ট সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে।
আসন্ন এশিয়া কাপের জন্য ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দল শিগগিরই সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাবে। তবে কোহলি টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন এবং এখন শুধুমাত্র ওয়ানডে ফরম্যাটে খেলছেন। তিনি অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিসিসিআই জানিয়েছে, জাতীয় দলে নির্বাচিত হওয়ার আগে সব খেলোয়াড়ের জন্য ফিটনেস টেস্ট এখন বাধ্যতামূলক। দলের দীর্ঘ ইনজুরির তালিকা বিবেচনায় এই নিয়ম আরও কঠোরভাবে কার্যকর করা হচ্ছে।
কোহলির লন্ডনে ফিটনেস টেস্ট নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এটিকে তার জন্য বিশেষ সুবিধা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ মনে করছেন, তার অভিজ্ঞতা ও ফিটনেসের কারণে এই ছাড় ন্যায্য। তবে এই ঘটনা ভারতীয় ক্রিকেটে টিম প্রোটোকল ও নিয়মের অভিন্নতা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।